মোঃ জহিরুল হক বাবু।।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানায় দায়েরকৃত ক্লু-লেছ হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটন, আসামী সনাক্তকরন এবং প্রধান ও একমাত্র আসামী গ্রেফতার করেছে র্যাব। এসময় চোরাইকৃত মালামাল ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে র্যাব।
র্যাব জানায়. গত ২৬ অক্টোর সকাল সাড়ে ৭ টায় জেলার নাঙ্গলকোট থানাধীন চান্দলা এলাকায় জবা বেগম (৭৫) কে তার নিজ ঘরে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পরিবার ও স্থানীয় লোকজনসহ নাঙ্গলকোট থানায় খবর দিলে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গনমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার নজরে আসলে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং হত্যা কান্ডের রহস্য উৎঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের নিমিত্তে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (৩১ অক্টোবর) সকালে অভিযান পরিচালনা করে নাঙ্গলকোট থানার সিজিয়ারা গ্রাম থেকে মোঃ খোরশেদ আলম (২৫), পিতা- মৃত আব্দুল গফুর, সাং- সিজিয়ারা, থানা- নাঙ্গলকোট, জেলা- কুমিল্লাকে গ্রেফতার করে।
বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে মোঃ খোরশেদ আলম জানায় যে, সে ভিকটিমকে নানী বলে সম্বোধন করত। ঘটনার দিন বিকালে ভিকটিম আসামী’কে নারিকেল বিক্রির জন্য প্রস্তাব দিলে আসামী ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে নারিকেল দেখে তাকে প্রতিটি নারিকেল ৩০ টাকা করে দিবে বলে জানালেও ভিকটিম প্রতিটি নারিকেল ৪০ টাকা করে চাহিদা দেয়।
তখন ভিকটিমের ঘরের ভিতর বিভিন্ন দামী আসবাবপত্র ও লকার দেখে তার ভিতর লোভের সৃষ্টি হয় এবং সে পুনরায় এসে নারিকেলের দরদাম করে এবং কৌশলে তার ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র সমূহ পর্যবেক্ষণ করে চলে যায়।
পুনরায় তৃতীয় বার ভিকটিমের ঘরে আসে এবং ভিকটিম নারিকেল যে দামে বিক্রি করতে চেয়েছিল সেই দামে নারিকেল ক্রয় করিতে আসামী রাজী হয় এবং কৌশলে ভিকটিমের অজান্তে বসত ঘরের পূর্ব পার্শ্বের উত্তরের দরজা খুলে চলে যায়।
পরবতীতে ভিকটিম ঘুমিয়ে পরলে আসামীর পরিকল্পনা মোতাবেক রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টায় পূনরায় আসামী ভিকটিমের বাড়িতে আসে এবং ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে। আসামী ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে ঘরের ভিতর রক্ষিত আলমারি, আসবাবপত্র খোজাখুজি করে আলমারিতে রাখা আড়াই হাজার টাকা পায়, কিন্তুু আসামির ধারনা ছিল সে অনেক টাকা স্বর্নালংকার পাবে কারন ভিকটিমের চার ছেলে প্রবাসী, অন্য ছেলে দেশে ভালো চাকুরি করে, ইতোমধ্যে ভিকটিম ঘরের মধ্যে আসামীর উপস্থিতি টের পায়, তখন আসামীর পালিয়ে যাবার সুযোগ থাকলেও আসামীর আশানারুপ মালমাল না পাওযায় বৃদ্ধ মহিলাকে চাকু দিয়ে গলায় পোচ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পরবর্তীতে আসামী আলমারিতে রাখা টাকা, ভিকটিমের ব্যবহৃত ২টি মোবাইল, ভিকটিমের হাতে থাকা স্বর্নের আংটি, নাকফুল ও কানের দুল খুলে নিয়ে ভিকটিমের ঘর থেকে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশানুরুপ টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার না পাওয়ায় ও চুরির সময় ভিকটিম তার উপস্থিতি বুঝতে পারায় সে নিজেই উক্ত হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাসা থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু, চোরাইকৃত স্বর্ন অলংকার, মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page